Ad-1

if( aicp_can_see_ads() ) {

ভারতের ভূপ্রকৃতি (Relief Of India : Part -3)


উপদ্বীপীয় মালভূমি: (Peninsular Plateau)

অবস্থানঃ  উপদ্বীপীয় (ত্রিভুজাকার)  মালভূমি অঞ্চলটি উত্তরে সাতপুরা,মহাদেব,মহাকাল; পশ্চিমে পশ্চিমঘাট বা সহ্যাদ্রি এবং পূর্বে পূর্বঘাট বা মলয়াদ্রি পর্বত দিয়ে পরিবেষ্টিত । 

আয়তনঃ ত্রিভুজাকৃতি এই মালভূমির উত্তর থেকে দক্ষিণে দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার এবং পশ্চিমঘাট পর্বত থেকে পূর্বে রাজমহল পর্যন্ত প্রায় ১৪০০ কিমি ।এর আয়তন প্রায় ১৩.৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার

ভূপ্রাকৃতিক বিভাগঃ উপদ্বীপীয় মালভূমিকে তিনটি প্রধান ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ পশ্চিমঘাট বা সহ্যাদ্রি পর্বত,পূর্বঘাট বা মলয়াদ্রি পর্বত ও দাক্ষিণাত্যের মালভূমি ।

পশ্চিমঘাট বা সহ্যাদ্রি পর্বতঃ এই পর্বত পশ্চিমে আরবসাগরীয় উপকূল থেকে খাড়াভাবে প্রায় অবিচ্ছিন্নভাবে ভারতের পশ্চিম উপকূল বরাবর ১৬০০ কিমি ব্যাপী উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত।

ভূপ্রকৃতিঃ পশ্চিমঘাট পর্বতের উত্তরাংশের প্রথম ৬৪০ কিমি (গোয়ার উত্তরাংশ পর্যন্ত) সমান্তরাল লাভাস্তর দিয়ে আবৃত। এই অংশের চূড়াগুলো চ্যাপ্টাকৃতি এবং পূর্ব দিকে সিঁড়ির ধাপের মত ক্রমশ নেমে গেছে । বহু পর্বত শৃঙ্গের উচ্চতা ১৩০০-১৬০০ মিটারের মধ্যে। তবে এই অংশে পর্বতের উচ্চতা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৯০০-১২০০ মিটার। এখানকার উচ্চতম শৃঙ্গ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হরিশ্চন্দ্রগড় (১৪২৪ মি),মহাবালেশ্বর (১৪৩৮ মি), কালসুবাই (১৬৪৬ মি-এটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ) এবং সালহোর (১৫৬৭ মি)। ভোরঘাট ও থলঘাট এই অংশে দুটি উল্লেখযোগ্য গিরিপথ। 

নীলগিরি পর্বতের কাছে এই পর্বতের উচ্চতা বেশি । বাবুমালা (২৩৩৯ মি)এই অংশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। দাক্ষিণাত্যের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আনাইমুদি (২৬৯৫ মি)। এখানেই অবস্থিত উত্তর-পূর্বে পালনি এবং দক্ষিনে কার্ডামম বা এলামালাই।  পশ্চিমঘাট পর্বতমালার গড় উচ্চতা ৯৯০-১২৭০ মিটার। 

পূর্বঘাট বা মলয়াদ্রি বা মহেন্দ্রগীরিঃ

অবস্থানঃ দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের উপকূল থেকে কিছুটা অভ্যন্তরে পূর্বঘাট পর্বতমালা উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে বিচ্ছিন্নভাবে বিস্তৃত। 

ভূপ্রকৃতিঃ  পূর্বঘাট পর্বতমালার উচ্চতা অপেক্ষাকৃত কম । সেজন্য একে পূর্বঘাট না বলে পূর্বের পাহাড় বলা হয়। পূর্বঘাট পাহাড়ের উত্তরাংশ বিশেষত গোদাবরী নদীর মধ্যবর্তী অংশ কিছুটা একটানা চলে গেছে এবং এটি বন্ধুর ও পর্বতময়।  
    চারনোকাইট  (charnockite ও খণ্ডালাইট নামক কঠিন শিলায় এই অংশ গঠিত। এই অংশেই মহেন্দ্রগিরি (১৫০০ মি- সর্বোচ্চ শৃঙ্গ) নামক একটি পর্বত শৃঙ্গ রয়েছে। পূর্বঘাট এর অপর নাম মহেন্দ্রগিরি হয়েছে । উত্তরে কৃষ্ণা ও দক্ষিণে পেন্নার নদীর মধ্যে করমন্ডল উপকূলের সমান্তরালে নাল্লামালাই পাহাড় (৯০০-১১০০ মি) উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত যা  পালকোণ্ডা নামে পরিচিত।  এর পূর্বে আছে ভেলিকোণ্ডা পাহাড়।

দাক্ষিণাত্য মালভূমিঃ

অবস্থানঃ পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বত বেষ্টিত দাক্ষিণাত্য মালভূমি প্রধানত মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক (মহীশূর), অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর মধ্যে অবস্থিত। এছাড়া উড়িষ্যা ও মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশ এর অন্তর্গত।

ভূপ্রকৃতিঃ  দাক্ষিণাত্য মালভূমিকে ভূমিরূপের তারতম্য অনুযায়ী প্রধান দুটি অংশে বিভক্ত করা যায়। 

ক। দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তরাংশঃ 

(i)সাতপুরা পর্বতঃ এই পর্বত বিন্ধ্যের দক্ষিণে নর্মদা-উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। এটি পশ্চিমে রতনপুর থেকে পূর্বে অমরকন্টক পর্যন্ত প্রায় ৯০০ কিমি দীর্ঘ। এই পর্বতের অধিকাংশই ৫০০ মিটারের বেশী উচু এবং কতগুলো পর্বত শিখরের উচ্চতা ১০০০ মিটারের বেশি। উত্তরে মহাদেব এবং দক্ষিনে গাভিলগড় পাহাড় দুটি দ্বারা বেষ্টিত। সাতপুরার পূর্বাংশ মহাকাল নামে পরিচিত এবং এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ধূপগড় (১৩৫০ মি)পাচমারহির কাছে অবস্থিত। 

(ii)মহারাষ্ট্র মালভূমিঃ সমগ্র মাল্ভুমি অঞ্চল চটাল চুড়াবিশিষ্ট হয়ে ধাপে ধাপে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে নেমে গেছে। মহারাষ্ট্র মালভূমিতে অজন্তা, ইলোরা, হরিশচন্দ্র ইত্যাদি পাহাড় রয়েছে।

খ। দাক্ষিণাত্য মালভূমির দক্ষিণাংশঃ 

(i)কর্ণাটক মালভূমিঃ  দাক্ষিণাত্যের দক্ষিণাংশ গ্রানাইট,নিস শিলা দ্বারা গঠিত বলে উত্তরে মহারাষ্ট্র মালভূমির মত চ্যাপ্টা পাহাড়ের চূড়ার পরিবর্তে গোলাকার পাহাড়ের চূড়া দেখা যায়। এই মালভূমি অনেকটা সমতল। এই মালভূমিতে বাবাবুদান পাহাড়ে মুলানাগিরি (১৯২৩ মি) শৃঙ্গ অবস্থিত। 

মালনাদঃ কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমঘাট পর্বতের পাদদেশ অঞ্চলে উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত কিছুটা অঞ্চল বন্ধুর ও পর্বতময়। এই  পর্বতময় অঞ্চল মালনা নামে পরিচিত।

ময়দানঃ কর্ণাটক মালভূমির পূর্ব দিকের বাকি অংশ কিন্তু তরঙ্গায়িত উচ্চভূমির মত এবং এর মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে কঠিন শিলায় গঠিত অবশিষ্ট পাহাড়। পূর্বে এই তরঙ্গায়িত উচ্চভূমি অঞ্চল ময়দান নামে পরিচিত ।

(ii)তেলেঙ্গানা মালভূমিঃ তেলেঙ্গানা মালভূমি ও আরকান যুগের গ্রানাইট শিলা গঠিত বলে সর্বত্র একটি তরঙ্গায়িত ও গোলাকৃতি ভূমিরূপ দেখা যায়।

উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চল ও মেঘালয় মালভূমি অঞ্চলঃ
(North Eastern Hill Region & Meghalaya Plateau)

 উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চলঃ উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত সমান্তরাল ছোট ছোট পাহাড় মালভূমি ও উপত্যকা দ্বারা গঠিত অঞ্চলটি উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চল নামে পরিচিত । এই ভঙ্গিল পর্বত শ্রেণীর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশে মিসমি ও পাটকই পাহাড়, নাগাল্যান্ডের নাগা,বরাইল ও কোহিমা পাহাড় ; মনিপুরে মনিপুর পাহাড় ; মিজোরামের মিজো বা লুসাই পাহাড়; ত্রিপুরায় লংতরাই, সাখানটাং, জাজপুইটাং ইত্যাদি পাহাড় বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই পর্বতশ্রেণীকে এই অঞ্চলে পূর্বের পাহাড় (পূর্বাঞ্চল)বা পূর্বাচল বলা হয়। মিশমী পাহাড়ের ডাকাকুম; নাগাপাহাড়ের সরমতি; কোহিমা পাহাড়ের জাপভো, মিজো পাহাড়ের নউজুয়ারজো এবং জাজপুইটাং- এর বেতলিং সি উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ। 

মেঘালয় মালভূমি অঞ্চলঃ মেঘালয় মালভূমি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ২৪০ কিমি দীর্ঘ এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৯৭ কিমি প্রশস্ত। এই মালভূমি অঞ্চলের আয়তন প্রায় ২২৫০০ বর্গকিলোমিটার। মেঘালয় মালভূমি অঞ্চল তিনটি পাহাড় নিয়ে গঠিত - গারো,খাসিয়া ও জয়ন্তিয়া। গারো পাহাড়ে তুরা এবং খাসিয়া পাহাড়ের শিলং পাহাড় অবস্থিত। গারো পাহাড়ের নকরেক(১৪১২ মি) এবং খাসিয়া পাহাড়ের শিলং(১৯৬১ মি) উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ।

উপকূলবর্তী নিম্নভূমি বা সমভূমিঃ (Coastal Plains) 

অবস্থান:  ভারতের উপদ্বীপীয় অঞ্চলের উভয় সৈকতভূমিকে ঘিরে রয়েছে উপকূলবর্তী নিম্নভূমি বা সমভূমি। সামগ্রিকভাবে মূল ভূখণ্ডের উপকূল রেখার দৈর্ঘ্য ৬১০০ কিমি।

ভূপ্রকৃতিঃ  ভূ-প্রকৃতির তারতম্য অনুযায়ী ভারতের উপকূলবর্তী নিম্নভূমি বা সমভূমিকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ

ক। পূর্ব উপকূলীয় নিম্নভূমি বা সমভূমি(Eastern Coastal Plains)

অবস্থানঃ  এই সমভূমি উত্তরে সুবর্ণরেখা নদীর সামান্য উত্তর থেকে দক্ষিনে তামিলনাড়ুর শেষসীমা কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ কিমি প্রসারিত।  

ভূপ্রকৃতি ও গঠনঃ  পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি প্রধানত সামুদ্রিক পলল রাশি দিয়ে গঠিত। সমুদ্র থেকে এই অঞ্চলটি ক্রমশ ধীরে ধীরে উত্থিত হয়েছে বলে অনুমান করা হয়।
তবে পরবর্তী কালে কোন কোন অংশ সমুদ্রে নিমজ্জিত হওয়ার প্রমাণও পাওয়া যায়।উপকূলের উত্তরাংশে সমান্তরালে অবস্থিত বালিয়াড়ির অবস্থান এবং দক্ষিণাংশে বিভিন্ন জলাভূমি,উপহ্রদ(লেগুন), পুরোদেশীয় বাঁধও লক্ষ্য করা যায়। 

উপবিভাগঃ পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি দুটি অংশ। যথাঃ

১। উত্তর সরকার উপকূলঃ এই অঞ্চল উড়িষ্যার সুবর্ণরেখা নদীর মোহনার সামান্য উত্তর থেকে দক্ষিনে কৃষ্ণা নদীর বদ্বীপ এর সামান্য পূর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত।

২। করমন্ডল উপকূলঃ এই অঞ্চলটি কৃষ্ণা নদীর বদ্বীপ এর পশ্চিমভাগ থেকে দক্ষিনে কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত প্রসারিত । কাবেরী নদীর বদ্বীপ, ক্যালিতিয়ার পয়েন্ট, পাম্বান দ্বীপ ও কন্যা কুমারিকা অন্তরীপ এই অঞ্চলের প্রধান অংশ। 

খ। পশ্চিম উপকূলীয় নিম্নভূমি বা সমভূমিঃ 

অবস্থানঃ এই সমভূমি দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ থেকে উত্তরে নর্মদা নদীর তীরে অবস্থিত ভারুচ বন্দর পর্যন্ত ১৬০০ কিমি দীর্ঘ আর প্রস্থ ১০-৮০ মিটারের মধ্যে। উপকূলের পশ্চিমে রয়েছে আরব সাগর এবং পূর্বে পশ্চিমঘাট পর্বত।

ভূপ্রকৃতি ও গঠনঃ ভূপ্রকৃতিগত বৈচিত্রের সাপেক্ষে পশ্চিম উপকূলীয় নিম্নভূমিকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ

(i) মালাবার বা কেরল উপকূল: কর্নাটকের দক্ষিনে কেরল ও তামিলনাড়ুর কন্যা কুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত মালাবার উপকূল বিস্তৃত।  এই উপকূল ভূমিতে বহু লেগুণ  বা ব্যাকওয়াটার রয়েছে।  স্থানীয় ভাষায় এগুলোকে কয়াল বলা হয়। এখানকার ভেম্বনাদ কয়াল প্রায় ৮০ কিমি দীর্ঘ। 

(ii)কর্ণাটক উপকূল: এই অঞ্চল দক্ষিণে কেরলের উত্তরসীমা থেকে উত্তরে গোয়ার দক্ষিণসীমা পর্যন্ত প্রসারিত। এই অঞ্চল কানাড়া উপকূল নামেও পরিচিত। এই উপকূল ভাগের কাছে আঞ্জিদিভ,পিজিন,সেন্টমেরি প্রভৃতি দ্বীপ অবস্থিত।

(iii)কঙ্কন উপকূল: এই ভূমিভাগ গোয়ার দক্ষিণ সীমা থেকে উত্তরে ভারুচ বন্দর পর্যন্ত প্রসারিত।  এটি ভারতের সর্বাপেক্ষা ভগ্ন উপকূল। কঙ্কন উপকূলে কাদাভর্তি জলাভূমি, বালুকাময় সৈকতভূমি,সামুদ্রিক চড়া ও লাভা গঠিত পাহাড় দেখা যায় । এই উপকূলের কাছে সালসেট ও এলিফ্যান্টা দ্বীপ অবস্থিত। 

(iv)গুজরাট সমভূমি: গুজরাটের পূর্বাংশ সমভুমির যথাক্রমে সবরমতী, নর্মদা, তাপি  প্রভৃতি সমান্তরাল ও পশ্চিমবাহিনী নদীর দ্বারা বাহিত পললরাশি খাম্বাত উপসাগরে সঞ্চিত হয়ে উত্থান ঘটেছে।

(v)কচ্ছ ও কাথিয়াবাড় উপদ্বীপঃ পশ্চিম উপকূলের উত্তরদিকে কচ্ছ ও কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ অবস্থিত । এখানে কচ্ছের রান নামে এক ধরনের লবণাক্ত নিম্নভূমি রয়েছে।

প্রান্ত দেশীয় সাগর ও দ্বীপসমূহ(Seas & Islands)

অবস্থানঃ ভারতের উপকূলবর্তী অঞ্চলের পূর্বপ্রান্ত বঙ্গোপসাগর,পশ্চিমপ্রান্ত আরবসাগর এবং দক্ষিণ প্রান্ত ভারত মহাসাগর দিয়ে বেষ্টিত। এদের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের এবং আরব সাগরের বুকে অনেক দ্বীপ অবস্থান করছে। 

শ্রেণীবিভাগ: দ্বীপসমূহের অবস্থান অনুযায়ী ভারতীয় দ্বীপসমূহকে প্রধানত দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। যথাঃ

১। বঙ্গোপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ: 

অবস্থান: কলকাতা থেকে প্রায় ১২৫৫ কিমি এবং করমন্ডল উপকূল(চেন্নাই)থেকে প্রায় ১১৯১ কিমি দূরে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে ২০৪ টি দ্বীপ নিয়ে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এবং আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ থেকে প্রায় ১২০ কিঃমিঃ দূরে ১৯ টি দ্বীপ নিয়ে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত। এই দ্বীপপুঞ্জ দক্ষিনে প্রায় ৬ ডিগ্রী ৩০ মি উত্তর অক্ষাংশ থেকে উত্তরে ১৪ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। এর মোট আয়তন ৮২৯৩ বর্গ কিমি।

ভূ-প্রকৃতি: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সমূহ প্রকৃতপক্ষে নিমজ্জমান পর্বতশ্রেণীর উত্থিত অংশ। তিনটি প্রধান দ্বীপ যথা- উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ দ্বীপসমূহকে একত্রে বৃহৎ আন্দামান বলা হয়। ক্ষুদ্র আন্দামান দ্বীপটি ডানকান প্রণালী (১০ ডিগ্রি চ্যানেল)দ্বারা বৃহৎ আন্দামান থেকে বিচ্ছিন্ন। আন্দামানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ স্যাডেল পিক (৭৫০ মি)। এখানকার অপর শৃঙ্গটি হল মাউন্ট হ্যারিয়েট (৪৫০ মি)। 

  নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ মোটামুটি ভাবে অনুচ্চ(১৫মি) এবং এটি ১৯ টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এদের মধ্যেকার কার-নিকোবর দ্বীপ সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত এবং বৃহৎ নিকোবর আয়তনে সবচেয়ে বড়। এই দুই দ্বীপপুঞ্জ ছাড়াও বঙ্গোপসাগরে দুটি উল্লেখযোগ্য দ্বীপ রয়েছে। সেগুলি হল ব্যারেন ও নারাকোণ্ডাম দ্বীপ।   

২। আরব সাগরের দ্বীপপুঞ্জ:

অবস্থানঃ কেরালার মালাবার উপকূল থেকে প্রায় ৩২৪ কিমি দূরে ৩৬ টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে লাক্ষা, মিনিকয় ও আমিন দ্বীপপুঞ্জ গঠিত। এই দ্বীপপুঞ্জের বর্তমান সরকারি নাম রাখা হয়েছে লক্ষদ্বীপ।  এটি ৮ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ থেকে ১২ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। এই দ্বীপপুঞ্জের মোট আয়তন ৩২ বর্গকিমি। সবচেয়ে বৃহৎ দ্বীপটি হল মিনিকয় যার আয়তন ৪৫০০ বর্গকিমি। 

ভূপ্রকৃতিঃ লক্ষদ্বীপ মূলত প্রবাল দ্বীপ। এই দ্বীপের ভূপ্রকৃতি প্রায় সমতল।


ভারতের ভূপ্রকৃতি  (Relief Of India :  Part -2)

ভারতের ভূপ্রকৃতি  (Relief Of India :  Part -1)


আমাদের সাথে facebook page এ যুক্ত থাকতে এই লিঙ্কে click  করুন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.